যুক্তরাষ্টের ম্যারিল্যান্ড প্রবাসী এক ভদ্রমহিলা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে তার ছবি শাড়ির আঁচলে ছাপিয়ে গেলো নভেম্বরের, ২০২১ ফোবানাতে শাড়িটি পরে এক বিবভ্রান্তিতে পড়ে গেছেন । এ নিয়ে মেট্রো ওয়াশিংটন বাসীদের জল্পনা কল্পনার শেষ নেই । অনলাইনের বিভিন্ন পত্রিকায় এ নিয়ে সমালোচনা করতে ছাড়ছেন না । এই শাড়িতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবির কারণে সেই দিন তাকে ফোবানার বিভিন্ন অংশ থেকে দূরে রাখার সিদ্বান্ত নেয় ফোবানা কর্তৃপক্ষ । যদিও উনি ফোবানা সফল করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম ও অর্থ ব্যায় করেছেন । তবুও উনি সমালোচনার শিকার হয়ে গেছেন ।
ভদ্র-মহিলা এখনো বুঝতে পারছেন না, উনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে তার শাড়ির আঁচলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি ছাপিয়েছেন, এতে অন্যায়ের কিছু দেখতে পারছেন না, তার ভাষ্য, " শাড়ীটার আচলে জাতির পিতা'র ছবি, শাড়ীর পাড়ে নয়। জাতির পিতাকে মনে প্রানে ধারন করি বলেই এতো শ্রদ্ধার সাথে ছবিটা তুলেছি এবং সেদিন ফোবানায় পড়েছি কারন বিজয়ের মাস এবং প্রথম দিন বিজয় দিবস পালন হয়েছে বলেই শাড়ীটা পরেছি । জানি না কেন আমি ভিকটিম হচ্ছি । কেউ কি দেখাতে পারবে কোনদিন আওয়ামীলীগের বিপক্ষে কথা বলেছি? আমি কখনোই বি এন পি’র সার্পোটে ছিলাম না কোনদিন থাকবো না। মনে প্রানে জাতির পিতাকে ধারন করি, করবো ইনশাল্লাহ । জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু" । আসলেও তাই, আমি যতদূর চিনি উনি মনে প্রাণে আওয়ামীলীগ করেন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ভালোওবাসেন মনে প্রাণে। আমার এতে কোনো সন্দেহ নেই । কিন্তু সমস্যা কোথায়, এরকম ভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবি শাড়ির আঁচলে ছাপিয়ে পড়ার জন্য?
ছোট বেলায় আমাদের বাসা বাড়ি গোছানোর সময়, মা'র কোরানশরীফটা আমি মেঝের উপর রাখতে গেলে, মা না, না করে চিৎকার করে বললেন, "কোরানশরীফ মাটির উপর রাখতে হয় না, যে কোনো টেবিলের উপর রাখ ।" আমি কারণ জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন, "মাটিতে রাখলে ওটা আমাদের পা বরাবর হয়ে যায় ওটা পবিত্র গ্রন্থ পা বরাবর রাখলে পবিত্র গ্রন্থের পবিত্রতা নষ্ট হয় এছাড়াও যে কোনো ভাবে আমাদের পা লেগে যেতে পারে।।" বুঝলাম পবিত্র যেকোনো কিছু আমাদের পায়ের সমান্তরালে রাখতে হয় না । যা হোক মা'র কথায় যুক্তি ছিল খন্ডাতে পারলাম না, কোরান-শরীফটি যথারীতি টেবিলের উপর রাখলাম । মা'র শিক্ষাটি থেকে যদি বলি তাহলে বলতে হয়, কোনো পবিত্র-বস্তুকে, কোনো সম্মানী ব্যাক্তির ছবি, যেমন আপনি কোনো মানুষকে ভালোবাসলে অথবা সন্মান করলে তাদের প্রতিকৃতি বানিয়ে, পায়ের সমান্তরালে রাখা ঠিক নয় এতে সেই ব্যাক্তির অবামনা হয় ।
শাড়ির আঁচলের নকশা কে করেছে জানি না, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছবিটা যদি উপরে হলুদ বাংলাদেশের মাপের জায়গায় অথবা ছবিটার ঠিক উপরে থাকতো, তবুও হয়তো কিছুটা সামাঞ্জস্য হতো । শাড়ি পড়লে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শরীরের হাঁটুর উপরে বুক ও পিঠের বরাবরে থাকতো । তবুও আমি বলবো সম্মানিত ব্যাক্তিদের ছবি আমাদের যেকোনো ধরণের পোশাকের উপর না ছাপানোই ভালো । শাড়ির অচলটি যে ভাবে সাজানো হয়েছে, আপনি যখন শাড়িটি পড়বেন তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু'র ছবিটি হাঁটুর নিচে পা বরাবর চলে যাচ্ছে । হাঁটা-হাঁটির সময় শরীরে আঁচলে পায়ের বাড়ি লাগার স্বভাবনা আছে । এটাই সমস্যা অন্যের চোখে, আসলে সমস্যাও বটে । আমার মতে এরকম ভাবে সম্মানিত ব্যাক্তিদের ছবি না ছাপানোই ভালো কোনো পোষাকে । আর বিপরীত দলের লোকজন তো বসেই থাকে, কখন একটা ভুল পাবে সেটা নিয়ে বড় করার চেষ্টা করবে এবং সমালোচনা করতে ছাড়বে না, এটাই নিয়ম । অতএব, সুযোগ দেওয়ার দরকার কি ?
যা হোক ভদ্রো-মহিলা ঠিক মতো বুঝতে পারেন নাই ব্যাপারটি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে মন থেকে ভালোবেসে উনি একটু বিবভ্ৰান্তিতে পরে গেছেন । শাড়িটা এত চিন্তা করে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করার জন্য উনি পড়েন নি ।