ঘুম, কে না পছন্দ করে? আমিও করি, পৃথিবীর সব কাজ ফেলে শুধু ঘুমাতেই ইচ্ছে করে। সকালে ঘুম থেকে উঠা রীতিমতো এক আজাব মনে হয় আমার কাছে, অনেক কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠতে হয়। আরো কষ্ট হয় যখন ৫ঘন্টাও ঘুমাতে পারি না। সত্যি কথা বলতে কি, আপনি যদি ঘুম থেকে সকালে না উঠতে চান, তাহলে বুঝতে হবে আপনার শরীরে অলসতার বাসা বেঁধেছে এবং আপনি অচিরেই অসুস্থ হয়ে পড়তে যাচ্ছেন। যা কিনা আর কোনো দিনই ভালোর দিকে যাবে না। একজন পূর্ণাঙ্গ পুরুষের প্রতিদিন ঘুম দরকার ৫-৮ ঘন্টা আর একজন পূর্ণাঙ্গ মহিলার প্রতিদিন ঘুম দরকার ৬-৯ ঘন্টা। একজন পুরুষ যদি শাররীক কাজে লিপ্ত থাকেন তাহলে তার ঘুম ৫ঘন্টাই যথেষ্ট আর যদি সে মানসিক কাজে লিপ্ত থাকে, যেখানে কিনা মানসিক চাপের বা খুব চিন্তার কাজ করতে হয় তাহলে তার ঘুম দরকার ৮ ঘন্টা। ঠিক তেমনি, একজন মহিলা যদি শাররীক কাজে লিপ্ত থাকেন তাহলে তার ঘুম ৬ঘন্টাই যথেষ্ট আর যদি সে মানসিক কাজে লিপ্ত থাকে, যেখানে কিনা মানসিক চাপের বা খুব চিন্তার কাজ করতে হয় তাহলে তার ঘুম দরকার ৯ ঘন্টা। এখন কথা হচ্ছে আপনি কি ভাবে বুঝবেন আপনি বেশি ঘুমাচ্ছেন? good question!
একটি উপায় আছে বুঝার, যে আপনি বেশি ঘুমাচ্ছেন না কম ঘুমাচ্ছেন? তা হলো:
আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন, আমাদের মস্তিষ্কে সংগৃহিত চিন্তা গুলি বিক্ষিপ্ত ভাবে বিচরণ করতে থাকে ওই বিক্ষিপ্ত চিন্তা গুলির মধ্যে থেকে আমরা যে গুলো মনে রাখি সেগুলোকে আমরা বলি স্বপ্ন। কিন্তু ঘুম থেকে উঠার পর আমাদের বেশিভাগ সময় তা মনে থাকে না, কেননা আমরা তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকি। আমরা যখন আধো ঘুমে আধো জেগে থাকি তখন,আমাদের মস্তিষ্কের বিক্ষিপ্ত ভাবে চিন্তার বিচরণ গুলি আমরা কোনো না কোনো ভাবে তা মনে রেখে ফেলি. কেননা আমরা তখন আধো ঘুমে আধো জেগে থাকি। এর আগেই আপনার পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম হয়ে গেছে। সুতারং বুঝতেই পারছেন, ঘুম থেকে উঠার পর আপনার যদি কোনো স্বপ্ন মনে থাকে, তবে বুঝবেন আপনি অতিরিক্ত ঘুমিয়েছেন।
আপনারা অনেকে লক্ষ্য করবেন আমাদের অনেক সন্তানেরা অনেক রাতে ঘুমাতে যায় এবং সময় মতো ঘুম থেকে উঠেও যায়, স্কুলে'র জন্য। আমরা আসলে অনেকেই বুঝতে পারি না যে এটা অনেক ক্ষতি সাধন করে শিশুটির মানসিক বিকাশের জন্য। পর্যাপ্ত পরিমানে না ঘুমালে তার মস্তিস্কও কাজ করবে না ঠিকমতো এবং বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হবে তাকে ঘিরে। তা বুঝতে চাইলে দেখবেন সে, স্কুলে অতোটা আশা অনুরূপ ভালো রেজাল্ট করছে না।
সকালে ঘুম থেকে সূর্য ওঠার আগেই ওঠার অনেক উপকারিতা আছে যা আমরা উপলব্ধি করি না:
১. আপনি হাতে অনেক সময় পাবেন নিজের এবং সংসারের কাজগুলো শেষ করার জন্য।
২. সময় মত ঘুমাতে যাবেন, ঠিক মতো ঘুম হলে আপনি স্বাভাবিক ভাবে চিন্তা করতে পারবেন এবং অযথা আপনার পরিবারের সদস্যদের সাথে চিৎকার অথবা অযথা খারাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকবেন।
৩. আপনার সন্তানেরাও ঠিক মত পড়াশুনায় মন দিতে পারবে ওদের পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমের জন্য।
৪. আপনার নিয়ম মত খাবার খেতেও ভুলবেন না, কারণ আপনার হাতে অফুরন্ত সময় থাকবে।
৫. সময় মতো খাবেন আর সময় মতো ঘুমাবেন এতে আপনার মস্তিস্ক সুস্থ থাকবে, তার ফলে আপনিও সুস্থ থাকবেন কারণ আপনার সব কিছু মস্তিস্ক দ্বারা পরিচালিত।
আপনার জীবনের সাফল্যতার প্রথম চাবি কাঠিই হচ্ছে, সকালে ঘুম থেকে সূর্য ওঠার আগেই ওঠা। আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠুন এবং আপনার পরিবারের সবাইকে উঠতে সাহায্য করুন।
সেই জন্য জ্ঞানী মানুষরা বলেছেন:
-"সময় মতো ঘুমাও সময় মতো ওঠো, নিজেকে সুস্থ স্ববল রাখো"।